অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনাবলী: ইন্টারনেট সংস্করণ
নির্মাণ: বীরুৎজাতীয় সাহিত্য সম্মিলনী
(Birutjatio Sahitya Sammiloni , regn. no. S/2L 7523 of 2013-14. www.birutjatio.org)
নির্মাণ: বীরুৎজাতীয় সাহিত্য সম্মিলনী
(Birutjatio Sahitya Sammiloni , regn. no. S/2L 7523 of 2013-14. www.birutjatio.org)
অবনীন্দ্রনাথের জন্ম ১৮৭১ সালে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের পৌত্র গুণেন্দ্রনাথের কনিষ্ঠ পুত্র অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৮৮১ থেকে ১৮৮৯ অবধি সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৮৯৬ সালে মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে কোলকাতা আর্ট কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান লাভ করেন। এর পরে বহুদিন ধরে বহু সম্মান অর্জন করেছেন, বহু মর্যাদা সম্পন্ন পদ অলঙ্কৃত করেছন, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের অনুরোধে যেমন কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রানী বাগিশ্বরী অধ্যাপকের পদ অলঙ্কৃত করেছেন তেমনই ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত বিশ্বভারতীর আচার্যর পদেও আসীন ছিলেন।
একবার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে পরিহাসচ্ছলে বলেছিলেন অবন ঠাকুর ছবি লেখে। অথচ এই পরিহাসচ্ছলে বলা কথাটিই তাঁর সম্পর্কে প্রাঞ্জল হয়ে ওঠে। রেখায়, লেখায় যেভাবে তিনি ঠাকুরবাড়ির উত্তরাধিকারকে শুধু ধরে রাখেননি বরং নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়, তা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। লীলা মজুমদারের মতে,"অবনীন্দ্রনাথের রচনা সবই শিল্পীর মনের কথা, তাই ছবিগুলি যেমন বাঙ্ময়, গল্পগুলিও তেমনি চিত্রময়।" এই বাঙ্ময় চিত্র এবং চিত্রময় গল্পের সাধনা ছিল শিল্পীর সারাজীবন ধরে। ইতালীয় শিক্ষক গিলার্ডির কাছে ছবি আঁকার প্রথম পাঠ লাভ করেন। তাঁর কাছে অবনীন্দ্রনাথ শেখেন ড্রয়িং, প্যাস্টেল আর জলরঙের খুঁটিনাটি। পরবর্তী কালে ব্রিটিশ শিল্পী সি এল পামারের কাছে লাইফ স্টাডি, তেল রঙ ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন। তবে এই শিক্ষালাভেই থেমে থাকেনি তাঁর চিত্রকলার পারদর্শিতা। ভারতীয় রীতিতে আঁকলেন "কৃষ্ণলীলা-সংক্রান্ত"। ১৮৯৫ থেকে ঝোঁকেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিকে। ভারতীয় ও পাশ্চাত্য রীতির সংমিশ্রনে তৈরী হল এক নতুন ধারা। এছাড়াও জাপানী ও লোকায়ত শিল্পরীতিও জায়গা করে নিয়েছে তাঁর শিল্প সৃষ্টিতে।
চিত্রকলায় প্রথাগত শিক্ষালাভ করেছিলেন কিন্তু লেখনীর ব্যবহার ছিল সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত। মাত্র কয়েকবছরের বয়জ্যেষ্ঠ 'রবিকা'র অনুপ্রেরণায় লেখা হল 'শকুন্তলা'। অবনীন্দ্রনাথের কথায়, "সেই প্রথম জানলুম, আমার বাংলা বই লেখবার ক্ষমতা আছে।...নিজের উপর মস্ত বিশ্বাস এল। তারপর পটাপট লিখে যেতে লাগলুম--'ক্ষীরের পুতুল' 'রাজকাহিনী'ইত্যাদি।" তাঁর আঁকায় ও লেখায় একটি উল্লেখযোগ্য সামঞ্জস্য চোখে পড়ে। তাঁর শিল্পী সত্তা এবং লেখক সত্তা দুটি আলাদা হলেও একটি 'নৈর্ব্যক্তিক অন্তরঙ্গতা' কাজ করে গেছে দুই ক্ষেত্রে, সমানতালে। তবে ভাবতে আশ্চর্য লাগে যে রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় লেখার শুরু হলেও এমন আশ্চর্য্যরকমে রবীন্দ্রনাথের প্রভাবমুক্ত লেখনীর ব্যবহার রবীন্দ্র সমকালে ও পরবর্তী যুগে প্রায় অমিল। যেমন সহজে উপস্থাপিত করেছেন রাজস্থানের ইতিহাস নিঃসৃত 'রাজকাহিনী' তেমনই 'জার্গন' ব্যবহার না করেও অনায়াসে লিখতে পেরেছেন 'ভারত শিল্পে মূর্তি'। আত্মজীবনীমূলক রচনা ' আপনকথা' বা 'জোড়াসাঁকোর ধারে'তেও রয়েছে একটি সহজ করে গল্প বলার ইচ্ছা। ভ্রমণকাহিনী 'হাওয়াবদল' পড়তে পড়তে মনে হয় যেন দাদামশায়ের কাছে গল্প শুনছি আমরাও। আবার তেমনি অন্যদিকে রয়েছে বাগিশ্বরী অধ্যাপক থাকাকালীন ভাষণের সংকলন বাগিশ্বরী শিল্প প্রবন্ধ।
লেখা ও রেখার জগতে ছিল তাঁর অনায়াস বিচরণ। যে স্বতঃস্ফূর্ততায় গঠন করেছেন ওরিয়েন্টাল সোসাইটি অফ আর্ট তেমনি স্বতস্ফূর্ততার ছড়াছড়ি তাঁর লেখাতেও। তবে একথাও সত্যি তাঁর আঁকা ছবি নিয়ে যত আলোচনা হয়েছে লেখা নিয়ে তেমনটি হয়নি। আমরা অবন ঠাকুরের কিছু লেখা ও আঁকা নিয়ে একটি ওয়েবসাইট প্রকাশ করতে চলেছি। এটি একটি প্রয়াস এবং ধীরে ধীরে বেড়ে চলবে। আশা রাখি এটি চালিয়ে নিয়ে যেতে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত সাহায্য পাব।
একবার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে পরিহাসচ্ছলে বলেছিলেন অবন ঠাকুর ছবি লেখে। অথচ এই পরিহাসচ্ছলে বলা কথাটিই তাঁর সম্পর্কে প্রাঞ্জল হয়ে ওঠে। রেখায়, লেখায় যেভাবে তিনি ঠাকুরবাড়ির উত্তরাধিকারকে শুধু ধরে রাখেননি বরং নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়, তা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। লীলা মজুমদারের মতে,"অবনীন্দ্রনাথের রচনা সবই শিল্পীর মনের কথা, তাই ছবিগুলি যেমন বাঙ্ময়, গল্পগুলিও তেমনি চিত্রময়।" এই বাঙ্ময় চিত্র এবং চিত্রময় গল্পের সাধনা ছিল শিল্পীর সারাজীবন ধরে। ইতালীয় শিক্ষক গিলার্ডির কাছে ছবি আঁকার প্রথম পাঠ লাভ করেন। তাঁর কাছে অবনীন্দ্রনাথ শেখেন ড্রয়িং, প্যাস্টেল আর জলরঙের খুঁটিনাটি। পরবর্তী কালে ব্রিটিশ শিল্পী সি এল পামারের কাছে লাইফ স্টাডি, তেল রঙ ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন। তবে এই শিক্ষালাভেই থেমে থাকেনি তাঁর চিত্রকলার পারদর্শিতা। ভারতীয় রীতিতে আঁকলেন "কৃষ্ণলীলা-সংক্রান্ত"। ১৮৯৫ থেকে ঝোঁকেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিকে। ভারতীয় ও পাশ্চাত্য রীতির সংমিশ্রনে তৈরী হল এক নতুন ধারা। এছাড়াও জাপানী ও লোকায়ত শিল্পরীতিও জায়গা করে নিয়েছে তাঁর শিল্প সৃষ্টিতে।
চিত্রকলায় প্রথাগত শিক্ষালাভ করেছিলেন কিন্তু লেখনীর ব্যবহার ছিল সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত। মাত্র কয়েকবছরের বয়জ্যেষ্ঠ 'রবিকা'র অনুপ্রেরণায় লেখা হল 'শকুন্তলা'। অবনীন্দ্রনাথের কথায়, "সেই প্রথম জানলুম, আমার বাংলা বই লেখবার ক্ষমতা আছে।...নিজের উপর মস্ত বিশ্বাস এল। তারপর পটাপট লিখে যেতে লাগলুম--'ক্ষীরের পুতুল' 'রাজকাহিনী'ইত্যাদি।" তাঁর আঁকায় ও লেখায় একটি উল্লেখযোগ্য সামঞ্জস্য চোখে পড়ে। তাঁর শিল্পী সত্তা এবং লেখক সত্তা দুটি আলাদা হলেও একটি 'নৈর্ব্যক্তিক অন্তরঙ্গতা' কাজ করে গেছে দুই ক্ষেত্রে, সমানতালে। তবে ভাবতে আশ্চর্য লাগে যে রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় লেখার শুরু হলেও এমন আশ্চর্য্যরকমে রবীন্দ্রনাথের প্রভাবমুক্ত লেখনীর ব্যবহার রবীন্দ্র সমকালে ও পরবর্তী যুগে প্রায় অমিল। যেমন সহজে উপস্থাপিত করেছেন রাজস্থানের ইতিহাস নিঃসৃত 'রাজকাহিনী' তেমনই 'জার্গন' ব্যবহার না করেও অনায়াসে লিখতে পেরেছেন 'ভারত শিল্পে মূর্তি'। আত্মজীবনীমূলক রচনা ' আপনকথা' বা 'জোড়াসাঁকোর ধারে'তেও রয়েছে একটি সহজ করে গল্প বলার ইচ্ছা। ভ্রমণকাহিনী 'হাওয়াবদল' পড়তে পড়তে মনে হয় যেন দাদামশায়ের কাছে গল্প শুনছি আমরাও। আবার তেমনি অন্যদিকে রয়েছে বাগিশ্বরী অধ্যাপক থাকাকালীন ভাষণের সংকলন বাগিশ্বরী শিল্প প্রবন্ধ।
লেখা ও রেখার জগতে ছিল তাঁর অনায়াস বিচরণ। যে স্বতঃস্ফূর্ততায় গঠন করেছেন ওরিয়েন্টাল সোসাইটি অফ আর্ট তেমনি স্বতস্ফূর্ততার ছড়াছড়ি তাঁর লেখাতেও। তবে একথাও সত্যি তাঁর আঁকা ছবি নিয়ে যত আলোচনা হয়েছে লেখা নিয়ে তেমনটি হয়নি। আমরা অবন ঠাকুরের কিছু লেখা ও আঁকা নিয়ে একটি ওয়েবসাইট প্রকাশ করতে চলেছি। এটি একটি প্রয়াস এবং ধীরে ধীরে বেড়ে চলবে। আশা রাখি এটি চালিয়ে নিয়ে যেতে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত সাহায্য পাব।
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা অনুসন্ধান করুনঃ
সূচীপত্র
- ক্ষীরের পুতুল (১৮৯৬)
- রাজকাহিনী (১৯০৯)
- নালক (১৯১৬)
- বুড়ো আংলা (১৯৪১)